চোখের জলে স্বামীর মুক্তি দাবি
মুক্ত অনলাইন ডেস্ক
মায়ের কোলে ছোট্ট ফাতেমা তুজ জহুরা। এসেছে বাবার মুক্তির দাবি জানাতে। মা বিজু আক্তার শিশুকন্যাকে আকড়ে ধরে কাঁদছিলেন। মায়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা নির্বাক চোখ দুটো’যে কারাগারে থাকা বাবার মুক্তির আকুতি জানাচ্ছে তা জহুরার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।
সোমবার চোখের জলে স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে সাংবাদিক সম্মেল করেছেন চাঁদাবাজির মামলায় কারাগারে থাকা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্ত্রী বিজু আক্তার চৌধুরী ।
বিজু আক্তার বলেন, ‘আমি এখন কথা বলার মতো মানসিক অবস্থায় নেই। শুধু প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যেন আমার স্বামীকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া হয়। আমার স্বামী কোন অপরাধ করেনি।’
সাংবাদিক সম্মেলনে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতি সব যাত্রীর পক্ষ থেকে শুধু এটুকুই বলেছে যে, রাস্তায় বের হলে যেন তারা নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন। এমন নিরীহ একটি সংগঠনের নেতাকে যদি রিমান্ডে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে, তবে হতবাক হতে হয়। অথচ সমস্ত ক্ষেত্রে শোনানো হচ্ছে, সরকার গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখছে, তাদের উন্নয়নের কোনো তুলনা নেই।
তিনি বলেন, ‘এমন উন্নয়ন হচ্ছে যে রাস্তায় প্রতিদিন ১০ জনের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। রাষ্ট্র যদি নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না পারে, তবে আমরা কথা বলব না? আমরা সোচ্চার হব না?’ তিনি মোজাম্মেল হক চৌধুরীর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী যেসব তথ্য উপস্থাপন করতেন, তাতে সড়কের নৈরাজ্য প্রায়ই উন্মোচিত হতো। কয়েক বছর ধরে তিনি লেগে থেকে যে কাজ করে যাচ্ছিলেন, তিনি তো প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু এ বিষয়গুলোও সরকার সহ্য করতে পারছে না।
মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সামসুদ্দীন চৌধুরী দাবি করেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষকে যে গুটিকতক অপশক্তি জিম্মি করে, তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু তাকে যাত্রী অধিকার আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে না পেরে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হয়। সেটাও প্রমাণ করতে না পেরে আজ সোমবার তাকে ফেব্রুয়ারি মাসের এক বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই মামলায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
কারা হুমকি ধমকি দিচ্ছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সমিতির সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চার বছর ধরে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আমাদের প্রতিবেদনগুলো সরকারের পক্ষ থেকে যাচাই করা হয়েছে। তথ্য পাওয়ার পর তারা কোনো কিছু খুঁজে পায়নি। কিন্তু সরকারের কেউ কেউ বলেছেন, এটি অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের আরেকজন সহসভাপতি খায়রুল আমিন ও মোজাম্মেল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মনিরুল হক চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল