বুড়িমারী স্থল বন্দরের ৮ পয়েন্টে ভয়াবহ চাঁদাবাজি 

0

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থল বন্দরের ৮টি পয়েন্টে ভয়াবহ চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে এমন একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশ স্থল বন্দর কৃর্তপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) হাবিবুর রহমানের তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম) আসনের এমপি মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল।

তবে তদন্তে চাঁদাবাজির সত্যতা পাওয়া গেছে এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দ্রুত বুড়িমারী স্থল বন্দরে ওই চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এই সাংসদ

জানা গেছে- লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম) আসনের এমপি মোতাহার হোসেন তার নির্বাচিত এলাকায় অবস্থিত বুড়িমারী স্থল বন্দরে বেপরোয়া চাঁদাবাজি হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর সম্প্রতি একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে বুড়িমারী স্থল বন্দরের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এমপি মোতাহার হোসেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পত্র পেয়ে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কৃর্তপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) হাবিবুর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

ওই কর্মকর্তা বুড়িমারী স্থল বন্দরে সরেজমিন ও গোপনে তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে গত ১২ মার্চ সংশ্লিষ্ট দফতর গুলোতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। পরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাকসুদুর রহমানের গত ২১ মে স্বাক্ষরিত এক পত্রে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ভয়াবহ চাঁদাবজি নিরসনে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিদের্শ দিয়েছেন।

ওই তদন্ত প্রতিবেদেনের একটি কপি স্থানীয় এমপি মোতাহার হোসেনকেও দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বুড়িমারী স্থল বন্দরের ৮টি পয়েন্টে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। ওই পয়েন্ট গুলো হলো—  কাষ্টমস অফিস, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র, বন্দর অফিস, পুলিশের বিভিন্ন দফতর, লেবার শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন, দালাল অফিস, ট্রাক টার্মিনাল (বাবুল গ্রুপ) জিরো পয়েন্ট (বাবুল গ্রুপ)।

এমপি মোতাহার হোসেনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বুড়িমারী স্থল বন্দরের ৮টি পয়েন্টের মধ্যে দুই পয়েন্ট ট্রাক টার্মিনাল ও জিরো পয়েন্টে চাঁদাবাজি করেন পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবুল গ্রুপের লোকজন।

পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল বলেন- বুড়িমারী স্থল বন্দরে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। বাংলাদেশ স্থল বন্দর কৃর্তপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) হাবিবুর রহমান তদন্তে চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ পায়নি। তিনি হাজার হাজার লোকজনের সামনে বলে গেছেন তিনি তদন্তে কোনো চাঁদাবাজির সত্যতা পাননি। তার রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমার লোকজন বুড়িমারী স্থল বন্দরে চাঁদাবাজি করেন না। তবে বুড়িমারী স্থল বন্দর কৃর্তপক্ষের কোনো কর্মকর্তা ওই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

স্থানীয় এমপি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, বুড়িমারী স্থল বন্দরের ভয়াবহ চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসায়ী, ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা অতিষ্ঠ। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছি। তদন্তে চাঁদাবাজির সত্যতা পাওয়া গেছে। আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দ্রুত বুড়িমারী স্থল বন্দরে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে।

 

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.