কুবিতে তথ্য সংগ্রহে বিড়ম্বনায় পরছে সাংবাদিকরা

0

তথ্য অধিকার আইন লংঘনের অভিযোগ কুবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে

এবি এস ফরহাদ, কুবি প্রতিনিধি

তথ্য পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরীকের। সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে তথ্য চাওয়া পাওয়ার ব্যপারটা অধিক জরুরী। এ বিষযে নির্দিষ্ট আইন থাকলেও প্রায়ই তথ্য অধিকার আইন উপেক্ষিত হচ্ছে। তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বেশ বিড়ম্বনায় পরতে হচেছ।

বিশেষ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের তথ্য সরবারাহ না করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত সাংবাদিকরা আইন মেনে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের মৌলিক তথ্য পাওয়ার জন্য আবেদন করলেও তথ্য প্রদানে অনীহা দেখাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন শাখা ও কার্যালয়ের কর্মকতারা। ফলে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের তথ্য প্রকাশে কর্মকর্তাদের এমন বৈরী আচরন সংশ্লিষ্ট কাজে সঠিক তথ্য প্রকাশে চরমভাবে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা জানান, বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য প্রাপ্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যালয়ে যেতে হয়। সম্প্রতি কর্মকর্তারা মৌলিক তথ্য প্রদানে অসহযোগীতা করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্প্রসারণ প্রকল্পের দরপত্র প্রকাশের তারিখ, প্রকল্প ব্যয়, প্রকল্পটি শেষ হওয়ার সময়সীমাসহ সংশ্লিষ্ট কিছু মৌলিক তথ্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. মো. শাহাবুদ্দীন এবং অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাছির উদ্দিনের কাছে সরনাপন্ন হন। কিন্তু তারা বিভিন্ন অযুহাতে তথ্য প্রদানে অনীহা দেখান।

এছাড়া যে কোন তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে বিভিন্ন সময় যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অনুমতি অযুহাতে তথ্য প্রদান করা হয়না।

বাংলাদেশ সংবিধানের তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ তে জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এ আইনে ২ (ঘ) ধারায় তথ্য প্রদান ইউনিট ও তথ্যের ধরনের বিষয়ে বর্ননা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য প্রদানে বাধ্য থাকার কথা ৪ (ক) ধারায় বলা হয়েছে। নাগরিকের নিকট সহজলভ্য করে প্রচার ও প্রকাশ করতে নির্দেশনাও দেওয়া রয়েছে এ আইনে ৬ এর ১ ও ২ (১) ধারায়। এ আইনের ৭ ধারা লঙ্ঘন না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য না দেওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়মিত স্বভাবে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিকরা।

তথ্য প্রদানে অনীহা দুরভিসন্ধিমূলক এবং কোন অনিয়ম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য হতে পারে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিক’র (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ছাড়া সব তথ্য দিতেই বাধ্য তারা। তারা তথ্য না দিলে প্রতিবাদ করতে হবে এবং আইনের আশ্রয় নিতে হবে। এটা আইনী অধিকার।’ তথ্য প্রাপ্তিতে এমন অসহযোগতী পেলে তিনি ও তার সংগঠন সহযোগীতা করবে বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা তো নতুন নয় মন্তব্য করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘নিজের স্বার্থে নয় সাংবাদিকরা জনগণের স্বার্থে কাজ করে থাকেন। তথ্য প্রাপ্তি হলো অধিকার।’

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কতটুকু কাজ হচ্ছে, কি ধরনের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ হচ্ছে প্রভৃতি সম্পর্কে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট দেওয়া যায় না।’ এসব তথ্য দেওয়া যাবে এমনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উল্লেখ আছে কিনা তার জবাবে ড. তাহের বলেন, ‘এসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উল্লেখ থাকে না, এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকৌশল।

 

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.