নিরাপদ সড়ক গড়তে ঘুমন্তদের জাগিয়ে তুলছেন তিনি
খবরের পাতা খুললেই ভেসে উঠে রাস্তার ধারে মানুষের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন লাশ। মাঝে মাঝে রাস্তায় দেখা যায় লাশের মিছিল। এমন কোন দিন নেই শুনতে পাইনা সড়ক দূর্ঘটনার কথা। বাবা-মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদ।
শিশু থেকে শুরু করে কোন বয়েসি মানুষই রেহাই পায়না এটা থেকে। মায়ের বুক খালি করা এই সর্বনাশা সড়ক দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন মানুষের মধ্যে সচেতনতা। সড়ক দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শুধু গাড়ী চালকের সাবধানতাই নয় সাবধানতা প্রয়োজন পথচারীরও।
সাধারণ মানুষ যদি রাস্তায় চলাচলের আইন মেনে না চলে তবে সড়ক দূর্ঘটনা রোধ করা অসম্ভব। অধিকাংশ মানুষই রাস্তায় চলাচলের নিয়ম জানেন না। সুতরাং সাধারণ মানুষদের একটু সচেতন করে তুললে আমাদের সোনার বাংলাদেশ থেকে কমে যাবে সড়ক দূর্ঘটনা। কিন্তু সাধারণ মানুষদের সচেতন করার দায়িত্ব কে নেবে? নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সবাই।
শত ব্যস্ততার মাঝেও কিছু সমাজসেবী মানুষ যাদের অন্তর মানুষের দুঃখে কেঁদে উঠে। যারা বাবা মায়ের বুক আর খালি হতে দিতে চান না। মানুষদের একটু সচেতন করলেই যদি থেমে যায় সড়ক দূর্ঘটনা, তাহলে তাদের সচেতন করাই ভাল।
এই ধারণাকে সামনে রেখে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃ মাসুদ রানা সরকার নিয়েছেন এক ব্যতিক্রমি উদ্যেগ। তিনি পেশাগত কাজের পাশাপাশি একটু সময় পেলেই ছুটে চলেন মানব সেবার কাজে। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি বিভিন্ন সমাজ-সেবা মূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেন নিয়মিত।
মানুষের সড়ক নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বা লোকালয়ে সচেতন করার জন্য সভা, সমাবেশ, র্যালি, আলোচনার মাধ্যমে সড়ক দূর্ঘটনায় পতিত মানুষের পরিবারের সামাজিক, অর্থনৈতিক যে ক্ষতিগুলো হয় তা তুলে ধরেন বক্তব্যের মাধ্যমে অথবা মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে। প্রজেক্টরের মাধ্যেমে দেখানোয় মানুষের মধ্যে আরও সুস্পষ্ট হয় বিষয়গুলো।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মাসুদ রানা সরকারের কর্মকান্ড সরেজমিনে দেখতে গেলে সাক্ষাত মেলে তাঁর সাথে। আজ (২২/০৯/২০১৮) বিকাল ৫ ঘটিকার সময় উপজেলাধীন নাজিরপুর ক্লাস্টারে অধীনস্ত রশিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে সেখানে দেখা মেলে এই জনদরদী মানুষটির। সেখানে গিয়ে দেখা মেলে, নাজিরপুর ক্লাস্টারের অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য, ২৬টি স্কুলের একজন করে শিক্ষক এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘শিক্ষার্থী সহ আমদের সমাজের প্রতিটি শিশুর জন্য সড়ক নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজন। শিক্ষকবৃন্দ যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে আমাদের হাতে ন্যাস্ত সমাজের অগনিত শিশু অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে।হতাহতের হাত থেকে বেঁচে যাবে বহু মূল্যবান প্রাণ। এজন্য ” নিরাপদ সড়ক চাই” আন্দোলনে আমরা সহ সমাজের প্রতিটি নাগরিককে শরীক হতে হবে। এ বিশ্বকে শিশুদের জন্য বাসযোগ্য করতে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।‘
পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি অতিরিক্ত কাজ কেন করেন জানতে চাইলে মুক্ত প্রভাতকে বলেন, ’সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসাবে আমাদের সবারই জনসেবায় আত্মনিয়োগ করা উচিৎ। একজন একজন করে আমরা সবাই যদি এগিয়ে আসা শুরু করি তবে শিশুসহ সকলের চলাচলের পথ হবে ভয়মুক্ত ও নিরাপদ।আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজম্ম পথ চলবে নির্ভয়ে।’