নিয়ন্ত্রণে নেই খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ

0

মুক্ত অনলাইন ডেস্ক

চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়েছে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ।

রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হযেছে শনিবার বিকেল ৩টার দিকে। জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬ তলায় ৬১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়। তার আগে ওই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। রবিবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা.মামুন রহমানের বিষয়ে জানতে চান।

তখন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বিএনপি প্রধানকে জানান,ডা. মামুনকে সঙ্গে রাখা হবে। এরপর ডা. মামুন রহমানকে সঙ্গে রিয়েই মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে কেবিন ব্লকের ৬১২ নম্বর কেবিনে আলোচনায় বসেন। সেখানে ছিলেন মেডিকেল বোর্ডের অপর চার সদস্য ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত।

সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি ব্যাথাজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (গিটে গিটে ব্যাথা বা বাত) রোগে আক্রান্ত। ওনার হাত বাঁকা হয়ে গেছে, হাত তুলতে পারছেন না। এছাড়া ঘাড়ে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, বাম উরুর জয়েন্টে ব্যথা ও বাম হাঁটু ফুলে গেছে। বাম কাঁধ নাড়াতে পারেন না, হাত ঝিম ঝিম করে। তার বাম হিপজয়েন্টে আর্থ্রাইটিস আছে। তার দুই হাঁটু আগে থেকেই রিপ্লেস (প্রতিস্থাপন) করা, সেখানে কিছুদিন আগে ফুলে গিয়েছিল। ওষুধ দিয়ে তা ঠিক করা হয়েছে। ৩০ বছর ধরে খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। এই জটিল রোগ কন্ট্রোলে না থাকার কারণে তার বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার দুপুরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের ৪ সদস্য খালেদা জিয়াকে দেখে এসে এবং আগের ও বর্তমান ফাইলপত্র পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা করে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

ব্রিফিংএ আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমা পারভীন, ফিজিকাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ।

আবদুল জলিল চৌধুরী বলেন, বেগম জিয়ার উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে নেই। তার সুষ্ঠু চিকিৎসায় যে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে তা করার আগে হার্ট, কিডনি, লাংসহ বেশ কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কোনো ধরনের ইনফেকশন আছে কি-না তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আর সবকিছু ঠিক থাকলে দুই সপ্তাহ পর তার মূল চিকিৎসা শুরু হবে।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা বিষয়ে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

খালেদা জিয়া নিজের পছন্দমতো চিকিৎসকদের দ্বারা নিজের চিকিৎসা করাতে পারবেন মর্মে নির্দেশনা রয়েছে আদেশে। তবে চিকিৎসা করাতে হবে বিএসএমএমইউ-তেই।

এরআগে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় দেওয়া হয়। এরপর বেগম জিয়াকে রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগের জন্য বন্দি রাখা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন।-সূত্র ইত্তেফাক

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.