গুরুদাসপুরে ইউপি ভবন নির্মাণ নিয়ে দ্বন্দ, মানববন্ধন-বিক্ষোভ
গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন একটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বরাদ্দকৃত সরকারী জায়গায় পরিষদের ওই ভবনটি নির্মাণের জন্য বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন একপক্ষের লোকজন।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ৪ নম্বর মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ নিয়ে ওই অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত। শুরু থেকে পরিষদ ভবনটি মশিন্দা স্কুল সংলগ্ন ছিল। তৎকালীন সময়ে মরহুম সরাফতুল্লাহ তালুকদার চেওয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে উপজেলা ও ওই ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে দড়িবামনগাড়া গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ করে কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। এখনো ইউনিয়নের কার্যক্রম সেখানেই চলছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আধুনিক ভবন বরাদ্দ হয়েছে। নির্মাণ কাজটি শিগ্গিরিই শুরু হওয়ার কথা। সেই নির্মাণ কাজ নিয়েই ইউনিয়নবাসী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কাছিকাটা, রানীগ্রাম, হাঁসমারী, দড়িবামনগড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম মিলে রয়েছে তিনটি ওয়ার্ড। আর মশিন্দা, কান্দিপাড়া, চরপড়া, মাঝপাড়া, সাহপুর শিকারপুর, বামনকোলাসহ বেশ কিছু গ্রাম মিলে রয়েছে ছয়টি ওয়ার্ড। উল্লেখিত এসব গ্রামগুলোকে বিভক্ত করেছে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক।
কিন্তু সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বৃহৎ এসব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা না করে মহাসড়কের ওপারে শেষ সিমান্তে পরিষদ ভবনটি নির্মাণের পাঁয়তারা করছেন। ভৌগলিক দিক থেকে দড়িবামনগাড়া এলাকাটি উপজেলার সিমান্তে হওয়ায় সেখানে পরিষদ ভবন নির্মাণ হলে ইউনিয়নবাসীর ভোগান্তি আরো বাড়বে। তাই এসব এলাকার মানুষ মশিন্দা স্কুল সংলগ্ন এসএ ও আরএস খতিয়ানভুক্ত ৩৩০৮ নং দাগের সরকারী বরাদ্দকৃত জায়গায় পরিষদ ভবনটি নির্মাণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন।
মশিন্দা উচ্চ বিতদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় মশিন্দা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ ও বাজার সংলগ্ন সড়কের দুইপাশে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান। এরপর সরকারী জায়গায় পরিরষদ ভবনটি নির্মাণের দাবি সংবলিত একটি স্মারক লিপি গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রদান করা হয়।
তবে মশিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৫৬ সালে মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় জনগণের দাবীকৃত মশিন্দাতেই ছিল। সেসময় ইউপি চেয়ারম্যান মতি সরকার দীর্ঘদিন মশিন্দাতেই পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যানগণ বর্তমান দড়িবামনগাড়ায় স্থানান্তর করে এ পর্যন্ত পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। একারনে দড়িবামনগাড়াতেই নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- মশিন্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শরিফ, প্রধান শিক্ষক মাহাবুব হাসান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সামাদ, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমূখ। এরআগে শনিবারও বিক্ষোভের মাধ্যমে প্রতিবাদ করা হয়েছে।
মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল