আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নড়িয়ায় আ’লীগের দুইপক্ষে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৫

0

মুক্ত অনলাইন ডেস্ক

নড়িয়ার ভোজেশ্বরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। এ সময় ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

গুলিতে আহতরা হলেন, মাহবুব সিকদার, তুহিন সিকদার, আরিফ সিকদার, মুরাদ সিকদার অন্য আহতদের নাম তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।

আজ সোমবার সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোজেশ্বর পাইলট মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নড়িয়া থানা ও স্থানীয়রা জানায়, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আহম্মেদ সিকদার ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একে এম ইসমাইল হকের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর আলী আহমেদ সিকারের ভাভিজা আকাশ সিকদার ভোজেশ্বরের উপশী এলাকায় এলোপাতাড়ি মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে ইসমাইল হকের সমর্থক ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক খলিল কাজীর সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয়।

পরে আলী আহম্মেদ সিকদারের সমর্থকরা খলিল কাজীকে ধাওয়া করে। এ ঘটনায় আলী আহম্মেদ সিকদারের লোকজনের ভয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন বাজারে যেতে পারছে না। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইসমাইল হকের সমর্থকরা ভোজেশ্বর বাজারে উঠতে চাইলে আলী আহম্মেদ সিকদারের লোকজন বাধা দেয়। এতে ভোজেশ্বর পাইলট মোড়ে উভয়পক্ষ মুখোমুখি হয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় অন্তত অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা ও ভোজেশ্বর ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২৫ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় কোনো মামলা হয়নি।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোজেশ্বর বন্দর বাজারের আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক খলিল কাজী বলেন, কয়েক দিন আগে আলী আহম্মেদ সিকদারের এক ভাতিজা আমাদের এলাকার একটি সরু রাস্তা দিয়ে এলাপাতাড়ি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল।

এলাকার লোকজন এভাবে মোটরসাইকেল চালাতে না করায় সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ নিয়ে ওই মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। তাকে মারধর করা হয়নি। এরপর আলী আহম্মেদ সিকদারের সমর্থক মুরাদ, তুহিন ও নয়নসহ কয়েকজন মিলে আমাকে মারার জন্য ধাওয়া করে এবং বাজারে গেলে মারধর করার হুমকি দেয়। সোমবার ভোজেশ্বর এলাকায় কী হয়েছে এবং কাদের সঙ্গে মারামারি হয়েছে আমি বলতে পারি না।

উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আহম্মেদ সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসমাইল হকের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলে আসছে। সেই জেরে সোমবার তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করতে চাইলে আমদের সমর্থকরা প্রতিহত করে। এ সময় আমাদের ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত হয়।

নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আলী আহম্মেদ সিকদারের লোকজন আমাদের লোকজন বাজারে গেলেই মারধরসহ অপমান করে আসছে। তাদের ভয়ে অনেক লোক বাজারে যেতে পারছেন না। কয়েক দিন আগে খলিল কাজীকেও মারধর করার জন্য ধাওয়া করে। আমি ঢাকায় আছি। এলাকায় কী হয়েছে আমার সঠিক জানা নেই।

নড়িয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষের জন্য মুখোমুখি হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এলাকয় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.