গাজীপুরে গ্রেপ্তার চাকরিদাতা প্রতারকচক্রের ৭ সদস্য
মোঃ ইলিয়াছ মোল্লা
গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া কোম্পানি ও শাখা খুলে লোকজনকে চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চাকরিদাতা প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিভাগ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ইসমাইল হোসেন, আরিফুল হক পলাশ, আবদুল সাদ্দাম হোসাইন, লিটন ওরফে রনি, আ. কাদের, আ. ছালাম ও মাসুদ রানা। তারা সবাই ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে (২৯ অক্টোবর) গাজীপুর সদর এলাকার একটি ভবন থেকে ওই সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১০টি এলইডি টেলিভিশন, একটি রাইস কুকার, সিরামিক্সের ডিনারসেট, একটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাব নম্বরের রশিদ বই, ডিজিটাল সিল উদ্ধার করে সিআইডি।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডির কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান সিআইডির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার কবির হোসেন। তিনি জানান, লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ভুয়া নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বেকার যুবকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে জামানত হিসেবে টাকা জমা রেখে তা আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
চাকরি দেয়া ছাড়াও পণ্য বিক্রির মাধ্যমে টাকা উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে চক্রটি ইতোমধ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও সাভারের আশুলিয়া, গাজীপুর থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কবির হোসেন আরও জানান, চক্রটি প্রথমে পত্রিকা ও পরিবহনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। পরে খাওয়া ও বাসস্থানের সুবিধাসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির সঙ্গে পণ্য বিক্রির ওপর কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণ ও বেকার যুবকদের আকৃষ্ট করে। এরপর প্রশিক্ষণের কথা বলে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা জামানত হিসেবে নেয়।
পুলিশ সুপার জানান, চক্রটির ভয়ে ভুক্তভোগীরা এতদিন কিছু না বললেও সম্প্রতি কয়েকজন প্রতারিত যুবক সিআইডির কাছে বিষয়গুলো জানান। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত মাসের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রথম অভিযান চালানো হয় রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায়।
ওই এলাকায় তারা একটি ভুয়া এজেন্সির অফিস খুলে বসেছিলেন। ওই অফিস থেকে প্রতারক জসিম উদ্দিন, তপন কুমার মালো এবং রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সোমবার গাজীপুর থেকে এই সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গত মাসের ২৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণখান থানায় একটি প্রতারণা মামলা হয়েছে। সেই মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান কবির হোসেন।
মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল