গুরুদাসপুরে ৮শ কেজি সরকারী চাল পাওয়া গেল ডিলারের খাটের নিচে

0 ১০

দুস্থরা ফিরলেন খালি হাতে

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
জালাল শাহ নামের এক ডিলারের শয়ন ঘরের বক্স খাটের নিচ থেকে ৫০ কেজি ওজনের ১৬ বস্তা সরকারী চাউল উদ্ধার করা হযেছে। আজ সোমবার সকালে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর গ্রাম থেকে পুলিশ ওই চাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এঘটনায় খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির চাউল আত্মসাতের অভিযোগে ওই ডিলার জালাল শাহের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালাসহ তার ডিলারশিপ বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। এঘটনায় গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাদি হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে ডিলার জালাল শাহ পলাতক রয়েছেন।

এদিকে চাউল নিতে এসে শতাধিক দুস্থ চাউল না পেয়ে নাজিরপুর বাজারে বিক্ষোভ করেন। এসময় নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাওকত রানা লাবু দুস্থদের দ্রুত চাউল দেওয়ার জন্য আশ্বস্ত করেন।

দুস্থ আলেয়া বেগম, মন্তাজ আলী, জরিনা বেগমসহ অন্তত দশজন দুস্থ জানান- সপ্তাহের রোবি, সোম ও বুধবার চাউল বিক্রির কথা থাকলেও তিনি নিয়োমিত চাউল বিক্রি করেন নি। চাউল নিতে আসলে মাঝে মাঝে সুবিধাভোগিদের ফিরিয়ে দিতেন। সর্বশেষ সোমবার এসে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ পাওয়া যায়। অবশেষে চাউল না পেয়ে খালি হাতেই বাড়ি ফিরেন তারা।

গুরুদাসপুর থানার উপপরিদর্শক নুরে-আলম জানান- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডিলার জালাল শাহের বাড়িতে অভিযান চালানো হয় রোববার গভির রাতে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তার বাড়ির একটি কক্ষের খাটের বক্সের নিচে সাজানো সরকারী সিলযুক্ত চাউলের বস্তা পাওয়া যায়। এসময় ৫০ কেজি ওজনের ১৬ বস্তায় ৮শ কেজি চাউল জব্দ করা হয়। পরদিন সকালে পুলিশ তার বাড়ি থেকে চাউল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

ডিলার জালাল শাহের পক্ষে তার প্রথম স্ত্রী জাহানারা বলেন- শুক্রবার রাতে নাজিরপুরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তার স্বামী জালাল শাহ ওই চাউলগুলো ট্রলিতে করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। জালাল শাহ পলাতক থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওযা যায়নি।

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে- গত ১ নভেম্বর ৩১২ বস্তা চাল গুরুদাসপুর খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেন ওই ডিলার। ৫শ ২০ জনের মধ্যে ১০ টাকা কেজিতে ৩ নভেম্বর থেকে ওই চাউল বিক্রি শুরুর কথা। কিন্তু কোন এক রাতে ওই চালগুলো নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন ডিলার। ডিলার জালাল শাহ বেড়গঙ্গারামপুরের আব্দুর রাজ্জাক শাহ’র ছেলে। উপজেলার নাজিরপুর বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখান থেকেই তিনি সরকারী চাল বিক্রি করতেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোখলেছ আল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই উদ্ধারকৃত চাউল ডিলার আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তার বাড়ীর খাটের নিচ রাখে। সরকারি চাউল আত্মসাতের অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাছাড়া তার ডিলারশিপও বাতিল করা হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন- নাজিরপুর ইউনিয়নের বেরগঙ্গারামপুর গ্রামে ডিলার জালাল শাহ’র ডিলারশিফ বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে মামলা কার জন্য উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিয়োগকৃত ডিলার।

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.