পরিবারে হাসি ফুটাতে রাজপথেই ঈদ নন-এমপিও শিক্ষকদের

0

আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রতিটি ঘরে ঘরে ঈদের আনন্দ। ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে হৈ-হুল্লোড় আর ঘুরে বেড়ানোর দিন। অথচ পরিবারের মুখে একটু হাসি ফুটানোর চিন্তায় আর সম্মানের সাথে সমাজে বেঁচে থাকার প্রত্যাশায় ঈদুল ফিতরের দিনেও রাস্তায় নামতে হলো নন-এমপিও শিক্ষকদের। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবার ছেড়ে রাস্তায় বসে চোখের জলে ঈদ পালন করছেন তারা। তাদের বিশ্বাস চোখের জলের প্রতিটি ফোঁটার মূল্য দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের সড়কে ঈদ জামায়াত আদায় শেষে এমপিওভুক্তির দাবিতে তারা ভূখা মিছিল ও বিক্ষোভ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ৭ দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে টানা আন্দোলন করে যাচ্ছেন তারা।

এ সময় অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, শিক্ষাকতা করে কি আমরা অপরাধ করছি? তাই আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে? এসব বলতে বলতে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেন এমপিও দেওয়া হবে বাজেটের মাধ্যমে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী সেটা বাস্তবায়ন হতে দেননি। এখন আমরা আর কি করবো। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের টাকা নেই, ঈদও নেই। তাই প্রেস ক্লাবে গত ৭ দিন ধরে আমরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করছি। আজ ঈদের দিনও আমাদের এভাবেই কাটছে। এমপিও ছাড়া আমরা বাড়ি ফিরে যাব না।

তবে আমাদের আশা প্রধানমন্ত্রী এর সমাধান করবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায় বলেন, শিক্ষকরা ঈদ উদযাপন করার অবস্থায় নেই। তাই ঈদের জন্য ভুখা মিছিলের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। নামাজ আদায় শেষে তারা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর ভুখা মিছিল বের করেন শিক্ষকরা।

তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট বক্তব্য বা গেজেট প্রকাশের আগে শিক্ষকেরা রাজপথ ছাড়বেন না। এমপিওভুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন না করে, কারা এর বিরুদ্ধে কাজ করছে, সেটা পরিষ্কার হওয়া জরুরি।

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়, নতুন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।

কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। যদিও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা থেকে পর্যায়ক্রমে এমপিওভুক্ত করা হবে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.