বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে প্রভাবশালীর পাকা স্থাপনা নির্মাণ
মুক্ত অনলাইন ডেস্ক
মির্জাপুরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি ও এলাকাবাসীর যাতায়াতের রাস্তা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মানের অভিযাগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের জমি রক্ষা ও রাস্তা উদ্ধারের জন্য বর্তমান স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক এবং এলাকাবাসীর মধ্যেও বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। আজ ঘটনাস্থলে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকার লোকজন ঘটনার সত্যতা তুলে ধরেন।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আঞ্চলিক রোড গোড়াই-সখীপুর-ঢাকা রোড সংলগ্ন ১২১ নং সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক মণ্ডলী ও বর্তমান ইউপি সদস্য ও ১০ নং গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আদিল খান জানান, গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর মৌজার ২৪৩৩ নং দাগের ৯০৭ খতিয়ানের মধ্যে ৭০ শতাংশ জমি রয়েছে বিদ্যালয়ের নামে। এই জমিতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে খাজনাও নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে। সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের ছেলে মো. আজম খান (৫৫) বিদ্যালয়ের ২০ শতাংশ জমি নিজের দাবি করে প্রভাব খাটিয়ে রাতারাতি পাকা ভবন নির্মান করছেন।
সেই সঙ্গে পাশের রাস্তাও দখল করে পাকা ঘর নির্মান করছেন। তাকে বারবার নিষেধ করার সত্বেও তিনি পাকা ভবন নির্মান থেকে বিরত না হওয়ায় বিদ্যালয়ের জমি রক্ষা ও রাস্তা উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে ইউপি সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আদিল খান বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টার অভিযোগ করেন, ইতিপূর্বে এই আজম খান গংরা বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ দখলের চেষ্টা করেছিল।
কিন্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে জমি দখল করতে পারেনি। এখন আবার নতুনভাবে জমি দখলের চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে মো. আজম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সৈয়দপুর মৌজায় ২৪৩৫ নং ও ২৪৪৮ নং দাগের মধ্যে আমার পিতা মো. মজিদ খান, কেশব সরকার ও গয়ানাথ সরকার ৫০ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করে দিয়ে সৈয়দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।
বিদ্যালয়ের পাশে ২৪৩৩ দাগের মধ্যে আমার স্ত্রী নীনা আজমের নামে ৮৫ শতাংশ জমি রয়েছে। আমি সেই জমির উপর পাকা ভবন নির্মান করতে গেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকবাসীর মধ্যে কিছু লোকজন বাঁধা দিয়ে পাকা ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি দাবি করেন, আমি বিদ্যালয়ের কোনো জমি জবর দখল করিনি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টার, ইউপি সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আদিল খান ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জুলেখা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এটা বিদ্যালয়ের জমি। মো. আজম খান মিথ্যা ও জাল দলিল তৈরি করে বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের চেষ্টা করছেন।
তারা বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, ঐ জমি বিদ্যালয়ের। আজম খান জোর করে দখলের চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। মির্জাপুর থানার পুলিশ অফিসার (এসআই) ও দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের জমি জবরদখল হচ্ছে এমন একটি লিখিত অভিযোগ বিদ্যালয়ের পক্ষে ইউপি সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আদিল খান দিয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাকা ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল