যত্রতত্র পশু জবাই হচ্ছে রংপুর নগরীতে

0

মুক্ত অনলাইন ডেস্ক

যেখানে-সেখানে জবাই করা হচ্ছে গবাদী পশু। এসব জবাই করা পশুর বর্জ্য ফেলে রাখা হচ্ছে সড়কের ড্রেন, নালা এমনকি ডোবার কিনারে।

এ কারণে পঁচা দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্গন্ধে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, তেমনি রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রংপুর নগরবাসীকে। কারণ রংপুর নগরীতে এই যত্রতত্র পশু জবাইয়ের ঘটনা ঘটছেই।

মাংস ব্যবসায়ী কুদরত মিয়ারা জানান, বৃহত্তম সিটি কর্পোরেশন রংপুরের কসাইখানা মাত্র একটি। সেটির অবস্থাও জরাজীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর। দুই যুগ আগে নগরীর মাহিগঞ্জ সাতমাথা এলাকায় ওই কসাইখানাটি তৈরি করা হয়। এছাড়া নগরীতে আর কোনো কসাইখানা নেই। সেটিও অন্য এলাকা থেকে দূরে ও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

তাই পশু পরিবহনের সমস্যার কারণে ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেই পশু জবাই করতে হচ্ছে।এদিকে নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশন কোরবানির ঈদে জবাই করা পশুর বর্জ্য সঠিকভাবে অপসারণ করার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সারাবছর এ ব্যাপারে উদাসীন।

প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে জবাই করা পশুর বর্জ্য যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাংস ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাজার এলাকায় পশু জবাই করে পশুর রক্ত ও নাড়িভুড়িসহ বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে রাখছে। নগরীর সিটি বাজার, মুলাটোল বাজার, লালবাগের কলেজ রোড, শাপলা ও নগরীর রেলস্টেশনের বিভিন্ন স্থানে পশু জবাই করে পশুর বর্জ্য ও মল খোলাস্থানে ফেলে রাখছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। নগরীর সিটি বাজারের মাংস ব্যবসায়ী কাদের আলী বলেন, নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ২শ গরু, ৩শ থেকে ৪শ ছাগল জবাই করা হয়।

কসাইখানায় ৫টি গরু জবাই করে রাখার মতো জায়গা নেই। এছাড়া কসাইখানা সিটির অন্যান্য এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় মাংস ব্যবসায়ীরা সেখানে পশু নিয়ে যান না। তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসম্মত একাধিক কসাইখানা স্থাপন করলে আমরা সকলে সেসব কসাইখানাতেই নিয়ম মেনে পশু জবাই করব। রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১ অনুযায়ী কসাইখানার বাইরে পশু জবাই করা ও বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলে রাখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, যেখানে সেখানে পশু জবাই বন্ধ করতে পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১ রয়েছে। কেউ যদি যত্রতত্র পশু জবাই করে এবং তা প্রমাণিত হয় তবে অনূর্ধ্ব এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা অথবা অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

তবে যত্রতত্র পশু জবাই বন্ধ করার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি শাখার ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, সিটি কর্পোরেশনে মাত্র একটি কসাইখানা হওয়ার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে আমরা ইতোমধ্যে সিটি এলাকায় ১০টি কসাইখানা স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি।

যত্রতত্র পশু জবাই এবং পশুর বর্জ্য ফেলা বন্ধে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কসাইখানা স্থাপনের বিষয়ে সিটি মেয়রকে অবগত করা হয়েছে।

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.