ব্যাংকের টাকা লুট করতেই নৈশ প্রহরীকে খুন
মুক্ত অনলাইন ডস্ক
এটিএম বুথের নৈশ প্রহরীকে খুন করে ভল্ট ভেঙ্গে টাকা লুটের চেষ্টা ঘটনার প্রকৃত রহস্য তিন মাস পর উদঘাটন করলো পুলিশ। ভল্ট থেকে টাকা লুট করার জন্য খুন করা হয় নৈশ প্রহরী শফিকুল ইসলামকে। এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি জয়পুরহাটে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের নৈশ প্রহরী ছিরেন।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তি হচ্ছেন ঢাকা খিলগাঁও নয়াপাড়া দোতলা মসজিদ এলাকার মোতালেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া শিপন শিকদারের ছেলে রাব্বী শিকদার (১৯)। বুধবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাব্বী শিকদার ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে পুলিশকে জানায়, ঢাকা পুরানা পল্টন এলাকায় অবস্থিত ‘বেয়ারকুল কোম্পানি’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথের এসি সংযোগ ও মেরামতের কাজ করে সে।
এর ধারাবাহিকতায় গত মার্চ মাসে রাব্বী শিকদার সহযোগী দুই মিস্ত্রিসহ জয়পুরহাট মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথের এসি মেরামতের জন্য আসে এবং কাজ শেষ করে ঢাকায় ফিরে যায়। সেখানে এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা অনুযায়ী ভল্ট ভাঙ্গার গ্র্যান্ডিং মেশিন, ছুরি, রশি ও রুমালসহ ৯ আগস্ট জয়পুরহাটে আসে।
বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরির পর ১০ আগস্ট রাত ১২ টা ৫ মিনিটে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথের নৈশ প্রহরী শফিকুল ইসলামকে জানানো হয় এসি মেরামতের জন্য ঢাকা থেকে তাদের পাঠানো হয়েছে। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় শফিকুল ইসলাম বিশ্বাস করে কাজের সুবিধার্থে তাদের ব্যাংকের দোতালায় থাকার ব্যবস্থা করেন।
এ সময় উভয়ের মধ্যে আলাপ আলোচনা শেষে শফিকুল তাদের রেখে টয়লেটে যান। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী রাব্বী শিকদার ও সঙ্গে থাকা দুইজন সহযোগী শফিকুলকে টয়লেটে রশি দিয়ে বেঁধে বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। শফিকুলের কাছে থাকা চাবি দিয়ে এটিএম বুথের তালা খুলে তারা ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা সিসি ক্যামেরা খুলে রাখে এবং সার্কিট অফ করে দেয়। পরে মেশিন দিয়ে রক্ষিত টাকার ভল্টটি কাটার চেষ্টা চালায়। এতে সফলতা না পেয়ে ওই অবস্থায় রেখে তারা ঢাকায় চলে যায়।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক বুথের নৈশ প্রহরী শফিকুল ইসলাম খুনের ঘটনায় পরের দিন অজ্ঞাত আসামি করে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এলিট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিদর্শক আফজাল হোসেন।
দীর্ঘ ৩ মাস পর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হলো বলে জানান জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান।
মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল