১ লাখ ৩২হাজার টাকার কাজে প্রায় লাখ টাকার ঘাপলা
বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সরকারী বরাদ্দে ক্রীড়া সামগ্রী (ফুটবল ও ভলিবল) ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সূত্রে জানা যায়, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) অর্থায়নে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবে বিতরণের জন্য মিকাশা কোম্পানীর ১এক হাজার ২শত টাকা মূল্যের ৮০টি ফুটবল এবং ৩০টি ভলিবল দেয়ার জন্য টেন্ডার হয়। নাটোরের জাহাঙ্গীর ট্রেডার্স ঠিকাদারের পক্ষে ফুটবল ও ভলিবলগুলি ক্রয় করেন মিনহাজ মনির ও গোলাম রসুল ।
অভিযোগ উঠেছে মিকাশা কোম্পানীর বল ক্রয় করার কথা থাকলেও তা না করে ডিয়ার কোম্পানীর বিতরণ করা হয়। তাতে করে ১লাখ বত্রিশ হাজার টাকার কাজে ১লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার হয়। ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ে এমন অনিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রীড়ানুরাগী ব্যাক্তিগণ। উপজেলা প্রশাসনের স্বাক্ষরিত প্রাক্কলন পত্রে মিকাশা কোম্পানী ফুটবল ও ভলিবলের মূল্যসহ নাম উল্লেখ থাকলেও তা অস্বীকার করেন কর্তাব্যাক্তি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে উপজেলা প্রশাসন কেন এমন ক্রীড়া সামগ্রী ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নিলেন? না কী, জেনে শুনেই মেনে নেয়া হয়েছে। তবে ১লাখ ৩২হাজার টাকার কাজে লাখ টাকা লোপাট করারমতো অনিয়মের অভিযোগ প্রশ্নে সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কায়সার ওয়াদুদ বাবর বলেন, ‘আমার স্কুলে ডিয়ার কোম্পানীর একটি ফুটবল দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফুটবলটাতো নি¤œমানের।’ উপজেলার বিহারকোল নবারুণ ক্রীড়া চক্র ক্লাবের সেক্রেটারী প্রাক্তন খেলোয়াড় মখলেছুর রহমান মুক্তা বলেন, ‘আমি একজন খেলোয়াড় হিসেবে এমন অনিয়ম কখনই মানতে পারি না। মিকাশা কোম্পানীর ফুটবল ও ভলিবল বরাদ্দ হয়েছে। প্রতিটি মিকাশা বলের মূল্য বার শ’ টাকা অথচও ২নং ডিয়ার বল দেয়া হয়েছে। যার মূল্য মাত্র ২শ’ পঞ্চাশ টাকা। ইউএনও স্যারকে বলেছিলাম তারপরেও এমন ঘটনা ঘটলো। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়।’
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ক্রীড়ানুরাগী আল-মামুন সরকার বলেন, ‘আমাদেরকে ৪টি ডিয়ার কোম্পানীর নি¤œমানের ফুটবল দেয়া হয়েছে। যে কোম্পানীর বল দেয়ার কথা তা, না দিয়ে কম দামের বল দেয়া হয়। মাদক থেকে যুবকদের দূরে রাখতে খেলায় মনোনিবেশ করতে আমরা নিজের পকেটের টাকা খেলা-ধুলায় খরচ করি। অথচও সরকারীভাবে যা বরাদ্দ হয়েছে সেই টাকায় ক্রীড়া সামগ্রী না কিনে, যে অনিয়ম করা হয়েছে তা দুঃখ জনক।’ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্দিষ্ট বসার স্থান না থাকায় এখানে ওখানে বসে খেলোয়াড়রা কার্যক্রম করেন বলে হতাশাও ব্যক্ত করেন তিনি। তবে মনির এই কাজে জড়িত নেই বললেও অভিযুক্ত গোলাম রসুল অকোপটে স্বীকার করে বলেন, ‘আমিতো বলগুলি কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে দিয়েছি। তারাতো আমাকে কিছু বলেন নি। যা হয়েছে তাতো হয়েছেই। এখন আমি আর কী করবো। ’
প্রাক্কলন শীটে কোম্পানীর নাম ও মূল্য উল্লেখ করা থাকলেও তা অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু দাবি করেন, ‘কোন কোম্পানীর বল দেয়া হবে, তা উল্লেখ ছিলোনা। ফুটবল ও ভলিবল ক্রয়ে কোন রকম অনিয়ম হয়নি। সকলেই দেখে যেটা ভাল সেটাই দেয়া হয়েছে।’ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়দের দাবি সকলের চোখে ধুলো দিয়ে খেলাধূলার সামগ্রী ক্রয়ে এমন অনিয়মের ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে এমনাই প্রত্যাশা।
তবে মনির এই কাজে জড়িত নেই বললেও গোলাম রসুল অকোপটে স্বীকার করে বলেন, ‘আমিতো বলগুলি কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে দিয়েছি। তারাতো আমাকে কিছু বলেন নি। যা হয়েছে তাতো হয়েছেই। এখন আমি আর কী করবো। ’
ফুটবল ক্রয়ে অনিয়ম অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু দাবি করেন, ‘ফুটবল ও ভলিবল ক্রয়ে কোন রকম অনিয়ম হয়নি। কী বল দেয়া হবে তা উল্লেখ ছিলোনা। সকলেই দেখে যেটা ভাল সেটাই দেয়া হয়েছে।’