বিএনপিকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না- মোহাম্মদ নাসিম

0

অহিদুল হক, বড়াইগ্রাম (নাটোর)

১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে ফাইনাল খেলা হবে। এবার নির্বাচনে না এলে বিএনপিকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর যদি ফাউল খেলার চেষ্টা করে তাহলে জনগণ বিএনপিকে লালকার্ড দেখিয়ে দেবে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি বলেন, এখন উচ্ছাসের সময় নয়, এবারের নির্বাচন আমাদের জীবন-মরণের লড়াই। তাই নৌকাকে বিজয়ী করতে ঘুম হারাম করে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে সবাইকে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। বুধবার বিকেলে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার ১০ বছর পূর্তিতে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও ১৪ দলের উদ্যোগে নাটোরের বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল আয়োজিত জনসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল প্রামাণিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন স্বার্থমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

এ সময় তিনি বলেন, আজ গ্রেনেড হত্যা মামলার রায় হয়েছে, এ রায়ে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন গোরস্থানে। যথা সময়ে সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধিনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন হবেই; দুনিয়ার কোন শক্তি নেই নির্বাচন বন্ধ করে। যারা ঐক্যের কথা বলছে তারা আসলে ভোট ছাড়া ক্ষমতা দখল করতে চায়। গত নির্বাচনে বিএনপি না আসায় না খেলে গোল দিতে হয়েছে।

এবার না খেলে গোল দিতে চাই না। মেসি-নেইমার গোল দিতে ভুল করতে পারে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোল দিতে ভুল করেন না। তিনি বলেন, এক সময় রাজশাহী-নাটোর জঙ্গীবাদের আস্তানা ছিলো। বাংলা ভাই ছিলো, সে সময় নাটোরে আসতেই ভয় পেতাম। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসে এই জনপদকে শান্তির জনপদে পরিণত করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের ভুল হতে পারে, কিন্তু কোন মন্ত্রী-এমপি ভুল করলে শেখ হাসিনা ক্ষমা করেননি। ভুল করায় শেখ হাসিনা মন্ত্রীকেও বাদ দিয়েছেন, এমপিকেও জেলে পাঠিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলায় জড়িত তার ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি, দশ বছরও পর হলেও বাংলার আদালতে খুনীদের বিচার হয়েছে।

২১ শে আগষ্ট আমিসহ শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও ২১ জন নেতাকর্মী মারা যান। সেই খুনীদের আজ বিচার হয়েছে। এই খুনীদের আর কোন দিন ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম আরও বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিম বলেন, আওয়ামীলীগ বড় দল, সবাই মনোনয়ন চাইতে পারে, তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য দলের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ নাই।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন মোহাম্মদ নাসিম ভাই দেখে যান আজ চলনবিলের লাখ লাখ মানুষ এই জনসভায় সমবেত হয়েছেন। আজকের জনসভায় বিপুল পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে এই জনপদ নৌকার, এই জনপদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের। এই জনপদের মানুষ কখনও সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেবে না। তাই এই জনপদের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে পুনরায় বিজয়ী করবে ইনশাল্লাহ।

বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, শেখ হাসিনা হলেন ঐক্যের প্রতীক, নৌকা হলো ঐক্যের প্রতীক। আমরা তাই তার অধীনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। একটি কুচক্রী মহল একটি রাজনৈতিক মহল যারা বাংলা ভাইয়ের, যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষক তারা এই দেশকে পুনরায় পেছনের দিকে টেনে নিতে চায়। শেখ হাসিনা এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সেই চ্যালেঞ্জ হলো নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া। উনি যদি জয়ী হন তাহলে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে, আমরা বিশে^র দরবারে আরো উন্নতির সোপান তৈরী করতে পারবো। তাই এবারের নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হতে হলে আপনাদেরকে প্রত্যেক বাড়ি বাড়িতে নৌকার দূর্গ গড়ে তুলতে হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে শিক্ষার আলোয়, প্রতিটি ঘরকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করা, সবার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা এবং সবার হাতে হাতে মোবাইলের মাধ্যমে সবার হাতে হাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ^কে হাতের মুঠোয় এনে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দেশের সাড়ে চার লক্ষ শিক্ষার্থীকে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছি। আমরা আর মোবাইল আমদানী করবো না, দেশেই এখন মোবাইল তৈরী করা হবে। সরকারের এই উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে সবাইকে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মিজান, যুগ্ন সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও বনপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি, এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ এমপি, বগুড়া-৪ আসনের এমপি রেজাউল করিম তানসেন, তাড়াশ-রায়গঞ্জের সংসদ সদস্য স.ম আমজাদ হোসেন মিলন, গণতন্ত্র পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস.কে শিকদার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কমিউনিস্ট পার্টির যুগ্ন আহ্বায়ক ডা. অসিত বরণ রায়, বাসদ নেতা রেজাউর রশিদ খান রেজা, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, সাবেক গুরুদাসপুর

উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি। জনসভার নিরাপত্তায় আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ড্রোনের ব্যবহার উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা ছড়িয়েছে। এর আগে দুপুর থেকেই দৃষ্টিনন্দন ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড সম্বলিত মিছিল জনসভাস্থলে এসে মিলিত হয়।

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.