মাদককে না বলুন মাদক মুক্ত সমাজ গড়ুন
মাদক বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি সমস্যা। বলতে গেলে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা। নিজেদের প্রয়োজনে সমাজের সর্বস্তরের জনগন আজ মাদকরে বিরুদ্ধে সক্রিয়। সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এক কথায় মাদকের বিরূদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে সরকার। তারপর কি মাদকের সীমাহীন অগ্রযাত্রা থেমে গেছে। পাঠক সমাজকে বললে উত্তর আসবে, থামেনি হয়ত সাময়িক কিছুটা রোধ করা গেছে। সে ভাবে নিমূর্ল করা যায়নি। আমরা মাদক এর বিরুদ্ধে অভিযানের ব্যর্থতার জন্য সরকারী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে আঙ্গুল তুলে আমাদের দায় সারি। সমাজের একজন সদস্য ও রাষ্ট্রের একজন নাগরিক ও বর্তমান প্রজম্মের ধ্বজ্জাবাহী হিসাবে আমাদের যে দায়িত্ব ও কতর্ব্য আছে তা আমরা বে-মালুম ভূলে গেছি। আমাদের দেশে বিশেষ করে নব্বই দশকের পূর্বে পর্যন্ত সাধারন মানুষের নেশার উপকরন ছিল আফিম, গাজা ও চোলাই মদ কিন্তু নব্বই দশকের মাদকের একটি বিপ্লব সুচিত হয়। বিশেষ করে হেরোইন, কোডিন উৎপাদিত ফেন্সিডিল নেশার রাজ্যে আসে। অন্যান্য নেশার সাথে হিরোইন ও ফেন্সিডিল বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে। যুব সমাজ ব্যাপক ভাবে এই সর্বনাশা মাদকে জড়িয়ে পড়ে। সরকার ও যুগোপযোগী আইন করে অবৈধ মাদক নিমূলে ব্যবস্থা নেয়। তারপর মাদক এর সর্বগ্রাসী বিস্তার রোধ করা যায়নি। মাদকের সর্বশেষ সংস্করন বাবা বা ইয়াবা। ইয়াবা এর নেশা ও গ্রহন পদ্ধতি অনেকটা হেরোইন এর মতই। আমাদের প্রতিবেশী দেশ মায়নমার থেকে গোলাপী এই পিল বাংলাদেশে প্রবেশ করে। অনেকেই এই লাভজনক মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে। সারা দেশে মাদক এত দ্রুত সময়ে বিস্তারের জন্য এই ব্যবসার সীমাহীন লাভ ও লোভই দায়ী। সর্বশেষ সরকার মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। অনেক স্থানে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে বন্দুক যুদ্ধে বেশ কিছু প্রানহানীর ঘটনা ঘটেছে। যাই হোক মাদক আমাদের সমাজ দেশ ও বিশ্বের জন্য একটা হুমকি। মাদক এখন বলা হচ্ছে সকল অপরাধের মা।প্রশ্ন থেকে যায়,মাদক নিয়ন্ত্রনে সমাজের সদস্য হিসাবে আমাদের কি কিছুই করনীয় নেই। আছে, প্রথমে করনীয় হলো যে কোন প্রলোভনে পরে আমি মাদকের নিকট সপে দিব না। মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকের শিকার মাদক সেবীরা আমাদের সমাজের একটা অংশ এরা কারো ভাই কারো বাবা, কারো সন্তান মাদক ব্যবসা করে কতিপয় লোকজন তাহাদের নিজ স্বার্থ চারিতার্থ করার জন্য যুব সমাজকে টার্গেট করে আমাদের ভবিষৎ প্রজম্মকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দিচ্ছে। মাদক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সর্বোচ্চ সামাজের ১% এর কম অথচ আমরা ৯৯% লোক তাদের শিকার হচ্ছি তাদের ভয়ে মুখ বন্ধ করছি। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ওরা ওদের শক্তি বৃদ্ধি করছে আর আমাদের সামাজকে ধ্বংষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা সমাজের কথিত সুশীল ব্যক্তিরা মাদক কারবারিদের দেখে না দেখার ভান করছি। না দেখার ভান করতে করতেই মাদক হানা দিচ্ছে আমাদের বাড়ীতে ও বসত ঘরে। ডাক্তার, পুলিশ, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ আইনজীবী এমন কোন শ্রেণি পেশার লোক নেই যারা এর স্বীকার হয় নি। ঘুরে দাড়ানোর সময় এসেছে, ঘুরে দাড়াতেই হবে।
একান্ত নিজের জন্য আগামী প্রজম্মের জন্য মাদক কারবারীদের ধ্বংস করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের তথ্য দিতে হবে। সাহস সঞ্চয় করতে হবে। নিজের সন্তান পরিবার পরিজনদের দিকে কঠোর নজর দিতে যেন কোন ভাবেই মাদক এর সংসপর্শ্বে আসতে না পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে মাদক বিরোধী প্ররোচনা বৃদ্ধি করতে হবে। স্কুল কলেজ গামী ছাত্রদের সন্ধ্যার পর যেন কেহ অকারণে বাড়ীর বাইরে.না থাকে সে বিষয়ে অভিভাবকদের নিশ্চিত হতে হবে। ধমীয় অনুশাসন মেনে চলার শিক্ষা দিতে হবে। নিজের সন্তান ও পরিবারকে যতটা সম্ভব সময় দিতে হবে। আমি একজন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসাবে কোন পিতা মাতাকে দেখতে চাইনা যে, এসে তার কলিজার টুকরো সন্তান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জেল হাজতে পাঠানোর অনুরোধ করিবে। এটা সত্যিই অনেক কষ্টের। আসুন আমরা প্রথমে নিজেকে মাদক মুক্ত করি, তারপর আমরা পরিবার এরপর সমাজ এভাবে আমরা একদিন সকলে সম্মেলিত ভাবে বাংলাদেশ ও বিশ্বকে মাদক মুক্ত করব।