সিনিয়র নেতারা দেখা করবেন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সাথে
১৬জুন,২০১৮ শনিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিবসহ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, ভাইস চেয়ারম্যানবৃন্দ, উপদেষ্টা মন্ডলী, যুগ্ম মহাসচিববৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী, নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা শেরে বাংলা নগরস্থ শহীদ প্রেসিডন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। ঐদিন সকাল সাড়ে ১১ টায় পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।ফাতেহা পাঠ শেষে তারা নেতৃবৃন্দ কারাগারে যাবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে।
আজ শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব বলেন।
রিজভী অভিযোগের ভাষায় বলেন, মিথ্যা, সাজানো ও জালনথি তৈরি করে সরকারের নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করা মামলায় তিনি জামিন পেলেও মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি আবার তার পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা হয়নি। তিনি বলেন, রাজনীতিতে যতই বাদানুবাদ থাক, দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল পছন্দমতো দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিশ্চিত হবে ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বে দেশনেত্রী মুক্তি পাবেন। কিন্তু মূল মামলায় জামিন পাওয়ার পরও সরকার বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ করে বেগম খালেদা জিয়ার কারা মুক্তি আটকে দিয়েছে। তাছাড়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার জীবনাশঙ্কার কথা উল্লেখ করে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ উন্নত চিকিৎসার দাবি করলেও এখন পর্যন্ত সরকার বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা তো করেইনি বরং চিকিৎসা নিয়ে পানি ঘোলা করছে। ৭৩ বছরের বয়স্কা একজন জনপ্রিয় নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে সরকারের চরম নিষ্ঠুরতা, সরকার অমানবিকতার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল। অমানবিক ও নির্মম নিষ্ঠুরতার প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বড় বড় স্বৈরশাসকদেরও হার মানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
রিজভী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও কারাগারে বন্দী ছিলেন। তিনি বন্দী থাকা অবস্থায় সকল সুবিধা ভোগ করেছেন, পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবাও নিয়েছেন, এমনকি শুধু বেসরকারি হাসপাতালেই নয় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তিনি দেশের বাহিরে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অথচ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু গুরুতর অসুস্থ নন, যেকোনো মূহূর্তে বড় ধরণের ক্ষতি হবার আশঙ্কা করছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকগণ। তাকে পরিত্যক্ত, জীর্ণ-শীর্ণ কারাগারে বন্দী রেখে, ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করতে না দিয়ে শেখ হাসিনা চরম প্রতিহিংসার খেলায় মেতে উঠেছেন।
তিনি বলেন, মানুষের চিকিৎসা একটি মানবিক বিষয়। অথচ সেটি নিয়েও নোংরা তামাশা শুরু করেছে সরকার। আসলে প্রধানমন্ত্রীর চোখে চিরকালই ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন। একক অপরিসীম ক্ষমতার মালিক হিসেবে টিকে থাকতেই তিনি জুলুমের পথ বেছে নিয়েছেন। সেজন্যই বেগম জিয়ার চিকিৎসার দাবি অগ্রাহ্য করছেন। তবে ইতিহাস বড় নির্মম, ক্ষমতার দম্ভে, রাষ্ট্রীয় সকল শক্তি ব্যবহার করে একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যতই নিপীড়ণ করুন না কেন তাতে নিপীড়করাও নিরাপদ থাকবেন না।
রিজভী বলেন, ক্ষমতার মসনদ চিরস্থায়ী নয়, জননেত্রী খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বন্দী করে জনগণকে বঞ্চিত লাঞ্ছিত করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানুষের বাকস্বাধীনতা ফিরে পেতে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। আমি আবারও দলের পক্ষ থেকে আহবান জানাচ্ছি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মু্ক্তি দিন, কাল-বিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে তার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে দেশবাসী ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী-সমর্থকদের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং তার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
রিজভী আরও বলেন, বর্তমান সরকার আইন সম্মত সরকার নয় বলেই সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে বেপরোয়া সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করছে। নীচ রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনার কারণেই অবৈধ সরকার জুলুমের পথে হাঁটছে। দেশে বিভেদ সৃষ্টি করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কিছু রক্তপিপাসু মানুষ দ্বারা। শেখ হাসিনা সারাদেশটাকেই অধ:পতনের সর্বনিম্নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি হিংসার ভেতর লুকিয়ে থাকা প্রতিহিংসা পূরণের অগ্রপথিক। আমি অবিলম্বে হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানকে রাজীবকে ডিবি কার্যালয় থেকে মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।