মায়ের কোলে চড়ে আসা সেই শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিল ছাত্রলীগ

0

অারাফাত হোসাইন অভি

মায়ের কোলে চড়ে স্কুল এবং কলেজের গন্ডি পেরিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নেওয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী হৃদয় সরকারের পড়াশোনার খরচ জোগানোর দায়িত্ব নিয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগ।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস মুক্ত প্রভাতকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘হৃদয় অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যাচ্ছে। সে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অসাধ্য সাধন করে এখানে এসেছে। সবার কাছে হৃদয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

‘‘আমরা কখনই চাই না টাকা পয়সার কারণে তার পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটুক। তার ভর্তি হতে যত টাকা লাগবে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় যত খরচ ঢাবি ছাত্রলীগ বহন করবে।’’

পড়াশুনা পাশাপাশি হৃদয় সরকারকে অন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হৃদয় সরকার মুক্ত প্রভাতকে বলেন, ‘আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মিটিং ছিল। অফিস টাইম শেষ হয়ে গেছে। কালকে আমার সাবজেক্টের বিষয়ে জানানো হবে। সাবজেক্ট চয়েস, কোটার ফরম সব আজকে পূরণ করেছি। সবার সহায়তায় আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। অনেক যুদ্ধ করে আমাকে এখানে আসতে হয়েছে।

‘‘ছাত্রলীগ, লিংক ফর লাইফ, টিএনএসসিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ভাই ও দাদারা আমাকে সাহায্য করেছেন। প্রথম পছন্দ দিয়েছি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আর দ্বিতীয় পছন্দ সমাজবিজ্ঞান।’’

পছন্দক্রম পূরণ করে আসার পর মধুর ক্যান্টিনে হৃদয় ও তার মাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

ছাত্রলীগের সহযোগিতার কথা জানতে চাইলে হৃদয়ের মা সীমা রানী সরকার বলেন, ‘আমরা তাদের সহযোগিতার আশ্বাসে অনেক খুশি হয়েছি। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমার ছেলের পড়াশোনায় যত খরচ লাগে তা বহন করবে বলেছে। তবে আমি চাই ভর্তির সময় যে টাকা লাগবে সেটা আমিই পরিশোধ করব।

পরবর্তীতে তো হৃদয়কে সেখানে থেকেই পড়াশোনা করতে হবে। তখন কোনো দরকার হলে অবশ্যই তাদের শরণাপন্ন হবো।’ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ডিনস কমিটির সভায় শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে হৃদয় সরকারকে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদভুক্ত খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নেত্রকোনার হৃদয় সরকার। তার মেধাক্রম ছিল ৩ হাজার ৭৪০। সেরিব্রালপালসি রোগে আক্রান্ত হৃদয় ছোটবেলা থেকে হাঁটতে বা চলাফেরা করতে পারেন না। সম্প্রতি মায়ের কোলে চড়ে ঢাবিতে ভর্তিপরীক্ষা দিতে আসার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল

মুক্ত প্রভাত/রাশিদুল

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.